
বাংলাদেশে দেওয়ানি মামলার সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে (বর্তমানে ২১.৫ লাখের বেশি)। অনেক ভূমি-সংক্রান্ত মামলা বছরের পর বছর নিষ্পত্তি হয় না। এ কারণে সরকার ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩ এনেছে, যেখানে ৭ নম্বর ধারা খুবই কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
৭ নম্বর ধারার মূল কথা
যদি কেউ সর্বশেষ হালনাগাদ রেকর্ডে মালিক না হয়,
বা কোনো বৈধ দলিল বা আদালতের আদেশ না থাকে,
তবুও যদি সে জমি দখল করে রাখে → সেটা হবে অবৈধ দখল।
এক্ষেত্রে বৈধ মালিক সরাসরি এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করতে পারবেন। তদন্ত শেষে প্রমাণ মিললে অবৈধ দখলকারীদের উচ্ছেদ করে জমি ফেরত দেওয়া হবে।
শাস্তি
অবৈধ দখলের জন্য দোষী প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ২ বছর কারাদণ্ড এবং আর্থিক জরিমানা হতে পারে।
আবেদন করার ধাপ
প্রমাণ সংগ্রহ করুন
সর্বশেষ হালনাগাদ খতিয়ান
রেজিস্ট্রিকৃত দলিল
প্রয়োজনে মিউটেশন সনদ
জাতীয় পরিচয়পত্র
দরখাস্ত লিখুন
বরাবর: জেলা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট/ডিসি
সমস্যার বিস্তারিত লিখুন: কে জমি দখল করেছে, কবে থেকে, কিভাবে
সব কাগজপত্র সংযুক্ত করুন
আবেদন জমা দিন
স্থানীয় উপজেলা/জেলার এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট অফিসে সরাসরি জমা দিতে হবে
তদন্ত
২৪ ঘণ্টার মধ্যে আবেদন গ্রহণ করা হবে
৭ কর্মদিবসের মধ্যে মাঠ পর্যায়ে পুলিশ/ভূমি অফিস/সার্ভেয়ারের মাধ্যমে তদন্ত হবে
উচ্ছেদ ও দখল ফেরত
অবৈধ দখল প্রমাণিত হলে ম্যাজিস্ট্রেট উচ্ছেদের আদেশ দেবেন
জমি বৈধ মালিকের দখলে ফিরিয়ে দেওয়া হবে
গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা
আপনার মালিকানার কাগজপত্র ১০০% সঠিক হতে হবে।
ভুয়া বা অসম্পূর্ণ কাগজ দিলে উল্টো আপনার বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে।
আবেদন করার আগে অভিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নেওয়া উত্তম।
যদি দেখা যায় যে ওয়ারিশ হিসেবে আপনি আবেদন করেছেন, কিন্তু আসল মালিক ইতিমধ্যে জমি বিক্রি করে দিয়েছেন, তবে আবেদন ব্যর্থ হবে এবং আপনারই ঝুঁকি থাকবে।
জমি দখলমুক্ত করতে আর দেওয়ানি মামলায় বছরের পর বছর ভুগতে হবে না। এখন বৈধ কাগজপত্র থাকলেই জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করে ১৫–৩০ দিনের মধ্যে সমাধান পাওয়া সম্ভব।
Leave a Reply