মাত্র ২২ মিনিটের ব্যবধানে বঙ্গোপসাগরে জোড়া ভূমিকম্প

গভীর রাতে বঙ্গোপসাগর কেঁপে উঠল দুই দফা শক্তিশালী ভূমিকম্পে। মাত্র ২২ মিনিটের ব্যবধানে আঘাত হানে রিখটার স্কেলে ৬-এর বেশি মাত্রার দুটি কম্পন। তবে এতে কোনো সুনামির আশঙ্কা নেই এবং এখনো পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির খবরও পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।

ভারতের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি (এনসিএস) জানিয়েছে, সোমবার (২৯ জুলাই) রাত ১২টা ১১ মিনিটে প্রথম ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়, যার মাত্রা ছিল ৬.৩। আর দ্বিতীয় ভূমিকম্পটি হয় রাত ১টা ৪১ মিনিটে, যার মাত্রা ছিল ৬.৫। দুটি ভূমিকম্পের গভীরতাই ছিল ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার।

প্রথম ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কাছাকাছি বঙ্গোপসাগরে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এবং ইউরোপীয়-ভূমধ্যসাগরীয় সিসমোলজিক্যাল সেন্টার (ইএমএসসি) জানিয়েছে, দ্বিতীয় ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল গ্রেট নিকোবারের ক্যাম্পবেল বে থেকে প্রায় ৯৪ কিলোমিটার পশ্চিমে।

এদিকে, ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল সেন্টার ফর ওশান ইনফরমেশন সার্ভিসেস (আইএনসিওইএস) আশ্বস্ত করে জানিয়েছে, এই ভূমিকম্পের ফলে ভারতীয় উপকূলে সুনামির কোনো আশঙ্কা নেই।

প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, পশ্চিমবঙ্গ কিংবা ওড়িশার কোনো এলাকায় তবে হতাহত কিংবা সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। উপকূলবর্তী অঞ্চল ও দ্বীপগুলোর পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা হচ্ছে। তবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সবকিছুই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

ইউএসজিএস জানিয়েছে, প্রায় ২৫ হাজার মানুষ এই ভূমিকম্পের হালকা কম্পন অনুভব করলেও বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।

উল্লেখ্য, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ ভারতের ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলের মধ্যে অন্যতম। অঞ্চলটি ভূমিকম্পের সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ মানচিত্র ‘জোন-৫’ এর অন্তর্ভুক্ত। এ এলাকা সুন্দা মেগাথ্রাস্ট বরাবর অবস্থিত, যেখানে ইন্দো-অস্ট্রেলিয়ান প্লেট ও সুন্দা প্লেটের সংঘর্ষ হয় নিয়মিতভাবে। এই টেকটোনিক প্লেট সংঘর্ষই এ অঞ্চলে ঘন ঘন ভূমিকম্প এবং আগ্নেয়গিরির সক্রিয়তা ঘটায়।

২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর এই অঞ্চলে ৯.১ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর বিশাল সুনামি আছড়ে পড়েছিল ভারত মহাসাগরের তীরবর্তী দেশে-দেশে। সেই দুর্যোগে প্রাণ হারিয়েছিলেন ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ।

সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*