
ড্রাইভিং লাইসেন্স শুধুমাত্র গাড়ি চালানোর স্বীকৃতি স্বরূপ অনুমতিপত্র নয়, বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কার্যকলাপে ব্যক্তির পরিচয় শনাক্তকরণের ক্ষেত্রেও ড্রাইভিং লাইসেন্স একটি অপরিহার্য নথি। অনেকেই ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার প্রক্রিয়াটিকে বেশ জটিল মনে করেন, কিন্তু সঠিক তথ্য এবং ধাপে ধাপে প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে এটি আপনার জন্য আর কঠিন মনে হবে না।
বাংলাদেশে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হলে কিছু নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া ও যোগ্যতা অনুসরণ করতে হয়। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) জানিয়েছে, ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হলে প্রথমে শিক্ষানবিশ বা লার্নার লাইসেন্স নেওয়া বাধ্যতামূলক।
লাইসেন্স পেতে আবেদনকারীর ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা হতে হবে অষ্টম শ্রেণি পাস। অপেশাদার লাইসেন্সের জন্য বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর এবং পেশাদার লাইসেন্সের জন্য ২১ বছর হতে হবে। আবেদনকারীর মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ থাকা বাধ্যতামূলক।
আবেদন প্রক্রিয়া
প্রথমে অনলাইনে https://bsp.brta.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে লার্নার লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদন জমা দিলে অনলাইন থেকেই শিক্ষানবিশ লাইসেন্স প্রিন্ট করে নেওয়া যাবে। এরপর ২-৩ মাস প্রশিক্ষণের পর লিখিত, মৌখিক এবং ফিল্ড টেস্টে অংশ নিতে হবে।
লার্নার লাইসেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
• অনলাইনে নির্ধারিত ফরম পূরণ
• সদ্য তোলা ছবি (৩০০x৩০০ পিক্সেল, সর্বোচ্চ ১৫০ কেবি)
• রেজিস্টার্ড ডাক্তারের মেডিকেল সার্টিফিকেট
• জাতীয় পরিচয়পত্র ও ইউটিলিটি বিলের স্ক্যান কপি
• প্রয়োজনে বিদ্যমান ড্রাইভিং লাইসেন্সের কপি
• নির্ধারিত ফি (১ ক্যাটাগরি: ৫১৮ টাকা, ২ ক্যাটাগরি: ৭৪৮ টাকা)
পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য প্রয়োজন হবে
• নির্ধারিত ফরমে আবেদন
• মেডিকেল সার্টিফিকেট
• জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত কপি
• ফি জমাদানের রশিদ
• পেশাদার লাইসেন্সের ক্ষেত্রে পুলিশি তদন্ত প্রতিবেদন
• ১ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি
পরীক্ষা পাসের পর সংশ্লিষ্ট সার্কেল অফিসে আবেদন করে বায়োমেট্রিক্স (ছবি, স্বাক্ষর, আঙুলের ছাপ) দিতে হবে। লাইসেন্স প্রস্তুত হলে এসএমএসের মাধ্যমে গ্রাহককে জানিয়ে দেওয়া হয়।
পেশাদার লাইসেন্স পেতে বাড়তি আরও যা লাগবে
• হালকা লাইসেন্সের জন্য বয়স ২১ বছর
• মধ্যম লাইসেন্সের জন্য হালকা লাইসেন্স ব্যবহারের অভিজ্ঞতা কমপক্ষে ৩ বছর
• ভারী লাইসেন্সের জন্য মধ্যম লাইসেন্স ব্যবহারের অভিজ্ঞতা কমপক্ষে ৩ বছর
বিআরটিএ সতর্ক করে জানায়, অনলাইনে মিথ্যা তথ্য দিলে লাইসেন্স বাতিলসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply