
শরীয়তপুর থেকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী রুটের বাস পরিষেবা দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকার কারণে রুটের হাজার হাজার যাত্রী দারুণ ভোগান্তিতে পড়েছেন। যাত্রাবাড়ী থেকে শরীয়তপুরগামী বাস না পেয়ে অনেক যাত্রী দিশেহারা হয়ে পড়ছেন।
স্থানীয় ও পরিবহন সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুর থেকে ঢাকার যাত্রাবাড়ীমুখী ‘শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস’ পরিবহনের বাস মালিকদের কাছ থেকে এককালীন ৫ কোটি টাকা নয়তো প্রতিমাসে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদল ও যাত্রাবাড়ী এলাকার প্রভাবশালী নেতা মুশফিকুর রহমান ফাহিমের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে আজ শনিবার (১২ জুলাই) সকাল ১১টায় শরীয়তপুর বাস মালিক সমিতির কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছেন বাস মালিক সমিতি ও সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে বাস মালিকেরা অভিযোগ করেন, চাঁদা না দেয়ায় যাত্রাবাড়ী এলাকায় বাস ভাঙচুর ও স্টাফদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে। গত ৭২ ঘণ্টায় ২৫টি বাস ভাঙচুর করা হয়েছে এবং অন্তত ১০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। আজও দুইটি বাসে হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে মালিকপক্ষ জানায়।
বাস মালিকরা বলেন, যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে মাঝে মাঝে বিকল্প পথে পোস্তগোলা ব্রিজ, জুরাইন ও ধোলাইপাড়ে যাত্রী নামানো হচ্ছে। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, ফাহিমের লোকজন বাসগুলো পোস্তগোলা ব্রিজ পার হওয়ার পর হামলা চালাচ্ছে, যা ঢাকায় প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করছে।
এবিষয়ে জানার জন্য যুবদল নেতা মুশফিকুর রহমান ফাহিমের যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
হামলার শিকার এক বাসচালক সোহাগ মিয়া বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার যাত্রাবাড়ীতে পৌঁছালে হঠাৎ ১০-১২ জন মুখোশধারী ব্যক্তি বাস ভাঙচুর করে এবং আমাকে মারধর করে। আমরা নিরাপদে গাড়ি চালাতে চাই।’
শরীয়তপুর বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারুক চৌকিদার বলেন, ‘যাত্রাবাড়ী টার্মিনাল না পাওয়ায় বাসগুলো চৌরাস্তা মোড় থেকে ছেড়ে দিতে হয়। কয়েকদিন ধরে ফাহিম ৫ কোটি টাকা অথবা মাসে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করছে। চাঁদা না দেয়ায় হামলা হচ্ছে, শ্রমিকরা মার খাচ্ছে। আমরা কোনোভাবেই চাঁদা দিতে রাজি নই। আইনের শাসন ও নিরাপদ পরিবহন চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘শরীয়তপুরের প্রায় ২০ লাখ মানুষ এই অমানবিক পরিস্থিতির কারণে চরম দুর্ভোগে রয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে সেনা ক্যাম্প, র্যাব, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত স্মারকলিপি দিয়েছি। দ্রুত সমাধান দাবি করছি।’
শরীয়তপুর বাস মালিক সমিতির সভাপতি ফারুক তালুকদার জানান, ‘আমরা দীর্ঘদিন সুনামের সঙ্গে যাত্রীসেবা দিয়ে আসছি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট থেকে ফাহিম বিভিন্ন মালিক থেকে চাঁদা আদায় শুরু করেছে। প্রথমে বাস প্রতি ১০০-২০০ টাকা করতো, এখন এককালীন পাঁচ কোটি অথবা মাসে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করছে। তার বিরুদ্ধে র্যাব-পুলিশের কাছে ১৫-২০টি অভিযোগও জমা রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এর স্থায়ী সমাধান চাই। আমরা চাই চাঁদাবাজ মুক্ত একটি পরিবহন ব্যবস্থা। শরীয়তপুরের জনগণকে সাথে নিয়ে আমরা আইনের মাধ্যমেই এই দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবো।’
আরডি
Leave a Reply