স্কুলে ছুটি : আসছে নতুন ঘোষণা!

দেশজুড়ে শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি কমিয়ে শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বার্ষিক ছুটি কমানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। বর্তমানে গড়ে ৭৬ দিনের ছুটি থাকলেও সেটি কমিয়ে ৫৬ থেকে ৬০ দিন করার সুপারিশ এসেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক যৌথ সভা থেকে। তবে এ সিদ্ধান্ত ২০২৫ সালে কার্যকর হচ্ছে না, বরং সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৬ সাল থেকে নতুন নিয়ম চালু হতে পারে।

বর্তমানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্ধারিত ছুটির বাইরে নানা কারণে অতিরিক্ত ছুটি পড়ে। কখনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ, কখনো রাজনৈতিক কর্মসূচি, আবার কখনো প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে পাঠদান বন্ধ হয়ে যায়। এতে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় ছন্দপতন ঘটে এবং শিখন ঘাটতি তৈরি হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা মনে করছেন, এই ঘাটতি পূরণে ছুটি কমিয়ে পড়াশোনার ধারাবাহিকতা বজায় রাখা জরুরি।

সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বেগম বদরুন নাহার ডলির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় ছুটি কমানোর প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। এতে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ এই প্রস্তাবে একমত হলেও, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এখনো চূড়ান্ত মত দেয়নি। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বিষয়টি এখনো প্রাথমিক আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। সব পক্ষের মতামত নেওয়ার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বর্তমানে বিদ্যালয় পর্যায়ে বছরে বার্ষিক ছুটি রয়েছে ৭৬ দিন, কলেজ পর্যায়ে ৭১ দিন। এর সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটি যোগ করলে তা ১২৫ দিনেরও বেশি হয়ে যায়। এর ফলে শিক্ষার্থীদের পাঠ্যসূচি শেষ করা এবং শিক্ষার গুণগত মান বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই ছুটি কমিয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পাঠদান নিশ্চিত করতে চায় সরকার।

শিক্ষাবিদদের মতে, ছুটি কমিয়ে শুধু সময় বাড়ানোই নয়, বরং এর মূল লক্ষ্য হলো শিক্ষার ধারাবাহিকতা বজায় রাখা ও শিখনের মান উন্নয়ন। অনেক শিক্ষার্থী নিয়মিত ক্লাসে গেলেও ঘন ঘন ছুটি ও অনিয়মিত পাঠদানের কারণে পাঠ্যবই ঠিকভাবে শেষ করতে পারে না। এতে করে পরীক্ষার ফলাফলেও প্রভাব পড়ে।

সবশেষে বলা যায়, শিক্ষাক্ষেত্রে গুণগত পরিবর্তন আনতেই সরকার এই পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। তবে শিক্ষার্থীদের, অভিভাবকদের ও শিক্ষকদের মতামত এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির ভিত্তিতেই এটি চূড়ান্ত হবে। আর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে এটি শিক্ষার ভবিষ্যৎ উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*