
টেলিগ্রামে চাঁদাবাজি, অনুমোদনহীন গ্রুপ পরিচালনা এবং রাজনৈতিক কার্যক্রমে অর্থ সংগ্রহের অভিযোগে এবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘নিউজ ১৮’। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্ষমতা হারানোর পরেও কীভাবে ভার্চুয়াল মাধ্যমে দল পরিচালনা ও অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছেন তিনি, তার বিস্তারিত চিত্র উঠে এসেছে সেখানে।
টাকা দিলেই শেখ হাসিনার সামনে কথা বলার সুযোগ!
নিউজ ১৮ জানায়, আগামী ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ভারতে আশ্রয় নেওয়ার এক বছর পূর্ণ হচ্ছে। এর আগেই তার দল আওয়ামী লীগের ভেতরে চরম অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। দলটির একাধিক শীর্ষসূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগ এখন নানা সংকটে জর্জরিত। তবে সবচেয়ে বিস্ময়কর তথ্য হচ্ছে, টেলিগ্রাম প্ল্যাটফর্মে শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে কে কথা বলবেন, তা নির্ধারণেও অর্থ লেনদেন চলছে। এই অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছেন ওবায়দুল কাদের।
আরও পড়ুনঃ নয়াদিল্লিকে সংলাপের প্রস্তাব দিলেন শেহবাজ
টেলিগ্রামেই আওয়ামী লীগের ভার্চুয়াল ঘাঁটি
গত এক বছরে টেলিগ্রাম হয়ে উঠেছে নির্বাসিত আওয়ামী লীগের মূল সংগঠনিক প্ল্যাটফর্ম। কিছু গ্রুপে সদস্যসংখ্যা ২০ থেকে ৩০ হাজারেরও বেশি। প্রতিদিন রাত ৯টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে ভার্চুয়াল আড্ডা ও আলোচনার আসর। এতে অংশ নেন দলের কেন্দ্রীয় নেতা, সাবেক ও বর্তমান সংসদ সদস্য, জেলা-উপজেলার নেতারাও।
‘নিউজ ১৮’-কে দলটির নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো জানিয়েছে, এই সেশনগুলোয় শেখ হাসিনা নিজে অংশ নিলে কে তার সামনে কথা বলবে, সেটি পর্যন্ত নির্ধারিত হচ্ছে অর্থের বিনিময়ে। এতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মধ্যে ক্ষোভ ও বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ নয়াদিল্লিকে সংলাপের প্রস্তাব দিলেন শেহবাজ
প্রতিদিন একাধিক টেলিগ্রাম গ্রুপে অংশ নিয়ে নিজেই বক্তব্য রাখেন ওবায়দুল কাদের। প্রায়ই ‘ঢাকা ঘেরাও’ এর ডাক দেন তিনি। কিন্তু এসব ডাকে কোনো সময়সীমা বা বাস্তব কর্মপরিকল্পনার অভাব রয়েছে বলে দলের ভেতর অভিযোগ উঠেছে।
নিউজ ১৮-কে আওয়ামী লীগের এক জ্যেষ্ঠ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ওবায়দুল কাদেরকে এখন কর্মীরা প্রত্যাখ্যান করছে। তিনি নিজেকে প্রাসঙ্গিক রাখার জন্য অসংখ্য টেলিগ্রাম গ্রুপ তৈরি করেছেন। এগুলো দলের জন্য নয়, বরং একটি অর্থনৈতিক প্রতারণার জন্য ব্যবহার করছেন।
আরও পড়ুনঃ নয়াদিল্লিকে সংলাপের প্রস্তাব দিলেন শেহবাজ
তিনি আরও বলেন, শীর্ষ নেতৃত্ব জানতে পেরেছে, তিনি দলের সিনিয়র নেতা, সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রীদের কাছ থেকেও টাকা নিয়েছেন, শুধুমাত্র শেখ হাসিনার সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ার নামে।
দলীয় শৃঙ্খলা ভেঙে, অননুমোদিত গ্রুপ গঠন, অর্থ আদায় এবং গোয়েন্দা সংস্থার নজরে পড়ার আশঙ্কায় এখন উদ্বিগ্ন আওয়ামী লীগের অনেক সিনিয়র নেতা।
Leave a Reply