
সব ফরম্যাটেই মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের উইকেট যেন স্পিনারদের স্বর্গ। প্রতিপক্ষকে কাবু করতে বরাবরই ধীরগতির পিচ বানিয়ে খেলে বাংলাদেশ। সাম্প্রতিক সময়ে যখন ক্রিকেট বিশ্ব স্পোর্টিং উইকেটকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, তখন পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে সেই পুরোনো উইকেটকেই আবারও বেছে নিয়েছে স্বাগতিকরা। এই উইকেটেই আজ পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে উড়িয়ে দিয়েছে লিটন দাসের দল। ম্যাচ হেরে এবার মিরপুরের উইকেট নিয়েই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলী আগা।
বৃষ্টি-বিঘ্নিত আবহাওয়ায় বেশিরভাগ সময়ই উইকেট ছিল কভার দিয়ে ঢাকা। সিরিজের আগে উইকেট নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক লিটন দাসও। চেয়েছিলেন স্পোর্টিং উইকেট। কিন্তু মাঠে সেই ইচ্ছার প্রতিফলন দেখা যায়নি। বরং মুস্তাফিজ, তাসকিন, মেহেদী ও তানজিম হাসানের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে দাঁড়াতেই পারেননি পাকিস্তানি ব্যাটাররা। বিশেষ করে মুস্তাফিজের এক কাটারে বল যেভাবে নিচু হয়ে গেছে, সেটিই বলে দেয় উইকেট কেমন আচরণ করেছে। ব্যাটিং ধসে মাত্র ১১০ রানেই অলআউট সফরকারীরা। লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো না হলেও হৃদয় ও ইমনের ব্যাটে ৭ উইকেটে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।
ম্যাচ শেষে উইকেট নিয়ে সালমান বলেন, ‘আপনি যখন বাংলাদেশে খেলতে আসবেন, তখন এমন উইকেটের জন্যই প্রস্তুত থাকতে হবে। এখানে খুব কম সময়ই ভালো ব্যাটিং উইকেট পাওয়া যায়। এ নিয়ে আমাদের দলের মধ্যে আলোচনা করতে হবে।’
হারের পর ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেছেন পাকিস্তান অধিনায়ক। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, আমরা যথেষ্ট রান তুলতে পারিনি। ভালো শুরু করেছিলাম, কিন্তু মাঝপথে নিয়মিত উইকেট হারিয়েছি। এটা নিয়ে বসে বিশ্লেষণ করব এবং পরের ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব।’
বোলারদের নিয়ে সন্তুষ্ট সালমান বলেন, ‘তারা ভালো বল করেছে। তবে রান কম থাকায় ভুল করার সুযোগ ছিল না। জয়-পরাজয় খেলারই অংশ। আমরা স্কিল নিয়ে কাজ চালিয়ে যাব।’
এদিকে পাকিস্তানের প্রধান কোচ মাইক হেসন মনে করেন বাংলাদেশ এশিয়া কাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এমন উইকেটে খেলে ভুল করছে। এমন উইকেটে খেলে বাংলাদেশ জিতবে ঠিকই উন্নতি হবে না বলে মনে করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘না, আমি মনে করি এটা কারো জন্যই সহায়ক। যদি কেউ এশিয়া কাপ বা বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে এটা গ্রহণযোগ্য নয়। ব্যাটিংয়ে আমরা যে কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তার জন্য কোনো অজুহাত চলে না। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যদি কোনো পিচ আন্তর্জাতিক মানের না হয়, তাহলে অবশ্যই সেটা গ্রহণযোগ্য নয়।’
এমন উইকেট টি-টোয়েন্টির জন্য আদর্শ নয় বলে জানিয়েছেন হেসন। তিনি বলেছেন, ‘আমি এখানে বাংলাদেশকে বলার জন্য আসিনি যে তারা কীভাবে সব কিছু পরিচালনা করবে, তবে আমি মনে করি, যদি আপনি ক্রিকেটকে উন্নত করতে চান, তাহলে অবশ্যই ভালো ক্রিকেট উইকেট দরকার। আমার মনে হয়, এমনকি বিপিএলের সময়ও এখানে কিছু খুব ভালো ক্রিকেট উইকেট দেখা গেছে। কিন্তু যখন আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়, তখন সেগুলো প্রায়ই সেই মানের হয় না।’
Leave a Reply