
এবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত জাতীয় সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মঞ্চে পড়ে যান জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান।
তবে কিছু সময় পর উঠে আবার বক্তব্য দিতে শুরু করেন তিনি। পড়ে যাওয়ার পর আশপাশে থাকা নেতাকর্মীরা দ্রুত এসে তাকে উঠিয়ে দিলে তিনি ফের বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন। এ সময় তিনি দ্বিতীয়বার অসুস্থ হয়ে মঞ্চে পড়ে যান এবং পরে বসেই বক্তব্য দিতে থাকেন।
তবে আমির যখন প্রথমবার পড়ে যান তখন জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) উত্তরাঞ্জলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম হতভম্ব ও চিন্তিত হয়ে পড়েন এবং হাত তুলে মোনাজাত ধরেন। এ মুহূর্তের একটি ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হয়েছে। সারজিসের এ কাজটিকে নেটিজেনরা সাধুবাদ জানাচ্ছেন।
ভিডিওতে দেখা যায়, শনিবার (১৯ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বক্তৃতা দেওয়া অবস্থায় জামায়াত আমির অসুস্থ হয়ে পড়লে নেতাকর্মীরা পেছন থেকে দৌড়ে এসে তাকে ধরে তুলেন এবং উপস্থিত চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া শুরু করেন। এসময় পেছন থেকে সারজিস আলমও জামায়াত আমিরের দিকে এগিয়ে আসতে থাকেন এবং যখন দেখলেন সেখানে নেতাকর্মীদের ভিড় জমে গেছে তখন ভিড়ে প্রবেশ না করে তিনি পেছনের দিকে একপাশে দাঁড়িয়ে হাত তুলে মোনাজাত ধরে অসুস্থ আমিরের সুস্থতার জন্য দোয়া করতে থাকেন। একটু পর জামায়াত আমির আবার উঠে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দেওয়া শুরু করলে সারজিস তার মোনাজাত শেষ করেন।
এ কাজের জন্য তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশংসা কুড়াচ্ছেন সারজিস আলম। তার মোনাজাত সংবলিত ভিডিওটি ফেসবুকে পোস্ট করে আবু সালেহ মুসা নামে একজন লেখেন, ‘জামায়াতের আমির যখন পরে গেলেন তখন সারজিসও দৌড়ে কিছুটা সামনে আসেন। পরে একদম কাছাকাছি না আসতে পারায় পিছনে দাঁড়িয়ে হাত তুলে দোয়া করতে ছিলেন। ছোট ছোট বিষয়গুলোও হয়ত রাজনৈতিক সৌন্দর্য এবং ব্যক্তিত্বের পরিচয়।’
চৌধুরী খোরশেদ আলম রনি ফেসবুকে লেখেন, ‘ছোট ছোট বিষয়গুলোও হয়ত রাজনৈতিক সৌন্দর্য এবং ব্যক্তিত্বের পরিচয় বহন করে। সহনশীল রাজনীতির সৌন্দর্য এখানেই। মতবিরোধ থাকবে, তবে সবার আগে থাকবে উদারতা, মানবতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ।’ এদিকে, জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানের অসুস্থতার পর সারজিস আলম তার জন্য দোয়া চেয়ে নিজ ভেরিফায়েড ফেসবুকে একটি পোস্টও দেন। পোস্টে সারজিস লেখেন, ‘আল্লাহ জামায়াতে ইসলামীর সম্মানিত আমীরকে সুস্থতা ও নেক হায়াত দান করুন।’
তার পোস্টে এবি জুবাইর নামে একজন মন্তব্য করে লেখেন, ‘জামায়াতের আমীরের আশু সুস্থতা কামনা করছি। জীবনের শেষভাগে এসেও কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন মানুষটা। তার অসুস্থতা নিয়েও যারা মকারি করছেন তাদের মানসিক সুস্থতা কামনা করছি। সত্যি বলতে কিছু বোকাচন্দ্ররে দেখলেই মনে হয় আল্লাহ এরে পাঠাইছেই মানুষের ধৈর্য পরীক্ষা করার জন্য। জামায়াতের আমীরের বয়স বর্তমানে ৬৬ প্লাস। এরকম বয়োজ্যেষ্ঠ এই মানুষটার হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যাওয়া নিয়েও একটা গ্রুপ ট্রোল করছে! মকারি করছে!’
মো. জহির রায়হান রিপন নামের একজন মন্তব্য করেন, ‘সুস্থতা ,অসুস্থতা আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে,,,যারা ট্রল করছে তাদের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা রয়েছে।। সুস্থতা কামনা করছি।’ মো. আবদুল করিম লেখেন, ‘৫ আগস্টের পর থেকে উনি সবচেয়ে বেশি পরিশ্রম করছে রাজনীতিবিদ দের মধ্যে। তার সুস্থতা কামনা করতেছি।’ রেদওয়ান রাকিব নামের একজন মন্তব্য করেন, ‘এই বয়সেও লোকটা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। জেলায় জেলায় ঘুরে সমাবেশে বক্তৃতা দিচ্ছে। আল্লাহ নেক হায়াত দান করুক, সুস্থতা দান করুক।’
Leave a Reply