কেন লাল কাপড়ে ঢেকে দেওয়া হলো আবু সাঈদ স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্প?

ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ তুলে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী শহীদ আবু সাঈদ স্মরণে নবনির্মিত মেমোরি স্ট্যাম্প লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে দিয়েছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। শুক্রবার (১৮ জুলাই) বিকালে তারা লাল কাপড় দিয়ে এটি ঢেকে দেন।

শহীদ আবু সাঈদের স্মৃতিকে অম্লান করার জন্য নির্মিত মেমোরি স্ট্যাম্প কেন ঢেকে দেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে শিক্ষার্থী ইয়ামিন বলেন, শহীদ আবু সাঈদ স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্প তার বিপ্লবী ভূমিকাকে বিকৃত করা করা হয়েছে। আমরা দেখেছি, ১৬ জুলাই আবু সাঈদের শাহাদাতবার্ষিকীতে বেরোবিতে দুই উপদেষ্টা এলেও তারা তার কবর জিয়ারত করতে যায়নি। সেদিন তাদের উপস্থিতিতে এত ভুল কীভাবে হয়। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সহ প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ছিলেন- তাদের উপস্থিতিতে এমন ভুলে আমরা উদ্বিগ্ন। যারা ইতিহাস বিকৃত করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

অপরদিকে বেরোবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক শামসুর রহমান সুমন বলেন, আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি। তাদের সঙ্গে নিয়েই লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে দিয়েছি। আমরা মনে করি এখানে ইতিহাস বিকৃতি হয়েছে।

জানা গেছে, আবু সাঈদ স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্প লেখা ছিল, ‘রংপুরের ছেলে শহীদ আবু সাঈদ। জালেম ও জুলুমের বিরুদ্ধে যার শির ছিল চির উন্নত। তিনি বলতেন, ‘‘প্রয়োজনে শহীদ হবো, তবু মাথা নত করবো না’’। ১৬ জুলাই আসমানের দিকে দুই হাত প্রসারিত করে শাহাদাত বরণ করলেন আবু সাঈদ। এরপরই সারা বাংলাদেশ জেগে উঠে অনন্ত বিপ্লবের ওয়াদা নিয়ে।’ তবে এখানে ঠিক কোন বিষয়টিতে ইতিহাস বিকৃতি হয়েছে সে বিষয়ে কেউ কিছু বলেননি। কিন্তু ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই আবু সাঈদ পুলিশের গুলির মুখে দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়েছিলেন, আসমানের দিকে নয়।

প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক ও বেরোবির শিক্ষার্থীরা বলেন, আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও বন উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসানসহ অন্য অতিথিরা মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় আবু সাঈদ স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্পের ওপর থাকা লাল কাপড় সরিয়ে উদ্বোধন করার জন্য বেশ কিছুক্ষণ অবস্থান করলেও সেটি না করে তারা আবু সাঈদ গেটের ভেতরে স্থাপিত তোরণ ও যাদুঘরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরে শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেনকে ডেকে আনেন উপাচার্য ড. শওকত আলী। এ সময় ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফয়েজ আহামেদসহ কয়েকজন কর্মকর্তা মেমোরি স্ট্যাম্পের লাল কাপড় উন্মোচন করেন। এ সময় আইন ও বন উপদেষ্টা কাছে থাকলেও তারা উন্মোচন করেননি। এরপর আবারও লাল কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে রাখা হয়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমান বলেন, আবু সাঈদের জীবনের বিনিময়েই আজ দেশ ফ্যাসিস্ট মুক্ত হয়েছে। যারা এ ইতিহাস বিকৃত করেছে তা কেউই মেনে নেবে না। এটির প্রতিবাদ সবাই করবেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বলেন, যত দ্রুত সম্ভব আমরা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবো।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*