চেকের মামলা করতে হলে যেসব ডকুমেন্টস সংগ্রহে রাখা প্রয়োজন

চেক ডিজঅনার বা প্রত্যাখ্যাত চেকের ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হলে প্রয়োজন হয় সুনির্দিষ্ট ও উপযুক্ত কিছু নথিপত্রের। বিশেষজ্ঞ আইনজীবীরা বলছেন, এই ধরনের মামলায় জয়ের মূল চাবিকাঠি হচ্ছে যথাযথ প্রমাণ উপস্থাপন। তাই এমন মামলা দায়ের করতে হলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস অবশ্যই সংরক্ষণে রাখা উচিত।

প্রথম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হচ্ছে চেক নিজেই। যেটি অভিযুক্ত ব্যক্তি বাদীকে দিয়েছেন। ব্যাংকে জমা দেওয়ার পর যদি তাতে “পর্যাপ্ত ব্যালেন্স নেই” উল্লেখ করে প্রত্যাখ্যাত হয়, তখন ব্যাংক একটি চেক ডিজঅনার স্লিপ প্রদান করে। এই চেক এবং ডিজঅনার স্লিপ—এই দু’টি হলো মামলার মূল ভিত্তি।

এরপর আসে লিগ্যাল নোটিশ। চেক ডিজঅনারের ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আইনি নোটিশ পাঠানো বাধ্যতামূলক। এ নোটিশ আইনজীবীর মাধ্যমে পাঠানো হয় এবং সেটির একটি কপি সংরক্ষণে রাখতে হয়। অনেক সময় পত্রিকার মাধ্যমে নোটিশ প্রকাশ করাও প্রচলিত—সে ক্ষেত্রেও পত্রিকার কাটিং সংযুক্ত রাখা উচিত।

নোটিশ পাঠানোর প্রমাণ হিসেবে ডাক বিভাগের রশিদ (রিসিপ্ট) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি প্রাপক নোটিশ গ্রহণ করেন, তাহলে প্রাপ্তি স্বীকারপত্র সংযুক্ত করাও মামলার পক্ষে একটি শক্তিশালী দিক। অন্যদিকে, যদি নোটিশ ফেরত আসে বা গ্রহণ না করা হয়, তাহলেও রিসিপ্টটি প্রমাণ করে যে বাদী পক্ষ নিয়ম মেনে নোটিশ পাঠিয়েছিল।

এছাড়া লেনদেনের পেছনের কারণ বা প্রেক্ষাপট যদি কোনো চুক্তিপত্র বা স্ট্যাম্পে লিখিত ডকুমেন্টস দ্বারা প্রমাণ করা যায়, তাহলে মামলাটি আরও শক্তিশালী হয়। যেমন: ধারের চুক্তিপত্র, বিনিয়োগ চুক্তি বা অন্য যেকোনো আর্থিক লেনদেন সম্পর্কিত নথি।

চেক ডিজঅনার মামলার জন্য যে পাঁচটি ডকুমেন্টস সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ: মূল চেক, চেক ডিজঅনার স্লিপ, লিগ্যাল নোটিশের কপি, ডাক বিভাগের রিসিপ্ট, (যদি থাকে) প্রাপ্তি স্বীকার রসিদ এবং লেনদেন-সংশ্লিষ্ট অন্যান্য চুক্তিপত্র।

আইনজীবীরা পরামর্শ দিচ্ছেন, এসব ডকুমেন্টস যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও উপস্থাপন করতে পারলে চেক ডিজঅনার মামলায় ন্যায়বিচার পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*