গোপালগঞ্জের আজকের পরিস্থিতি নিয়ে যা জানা গেল

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় গোপালগঞ্জে কারফিউ চলছে। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২২ ঘণ্টার এই কারফিউ বলবৎ থাকবে। এই পরিস্থিতিতে সেখানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

এর আগে গোপালগঞ্জ সদরে গতকাল বুধবার রাত ৮টা থেকে কারফিউ জারি করে জেলা প্রশাসন।

পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গোপালগঞ্জ শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক আছে। তবে পরিবেশ কিছুটা থমথমে।

আজ সকালে গোপালগঞ্জ সদর সার্কেল পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি স্বাভাবিক, তবে থমথমে। কারফিউ বলবৎ আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যা থেকেই গোপালগঞ্জে বিশেষ অভিযান পরিচালনা হচ্ছে। সেনাবাহিনীর অধীনে এটি পরিচালনা করছে পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।’

আইনশৃঙ্খলা বাহনীর সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে। ছবি: সংগৃহীত

গতকালের ঘটনায় গ্রেপ্তারের কথাও জানিয়েছে পুলিশ। তবে এর সংখ্যাটা কত সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি।

এদিকে আজ সকাল থেকে গোপালগঞ্জে এখন পর্যন্ত কোনো সংঘর্ষ বা মিছিলের খবরও পায়নি পুলিশ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আজ সকাল থেকে রাস্তায় খুব একটা গাড়ি দেখা যায়নি। অফিসগামী মানুষ ছাড়া তেমন কেউ ঘর থেকে বেরও হননি। রাস্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহনীর সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে।

এ ছাড়া ২/১টি রিকশা চলতে দেখা গেছে। তবে আতঙ্কে শহরের সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। ছবি: সংগৃহীত

এর আগে বুধবার রাতে আওয়ামী লীগ, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ এবং অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের সমর্থকরা লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে বিভিন্ন রাস্তা ও গলিতে অবস্থান নেয়। এর ফলে র‌্যাব, সেনাবাহিনী এবং বিজিবি সদস্যরা শহরে তাদের টহল জোরদার করে।

বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম জানান, গোপালগঞ্জে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ, র‌্যাব এবং সেনা সদস্যদের পাশাপাশি চার প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করেছে বিজিবি সদর দপ্তর।

সংঘর্ষ চলাকালীন একটি চিত্র। সংগৃহীত ছবি

প্রসঙ্গত, এনসিপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও এনসিপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে দিনভর সংঘর্ষে চারজন মারা যান। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ৯ জন এবং আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় বুধবার রাত ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত জেলায় কারফিউ জারি করে স্থানীয় প্রশাসন।

পরে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, বুধবার রাত ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*