মৃত্যুর ৩ দিন আগে খায়রুল বাসারকে কী বলেন মনু মিয়া

কিশোরগঞ্জের ইটনায় বিনা পারিশ্রমিকে তিন হাজারের বেশি কবর খোঁড়া সেই মনু মিয়া (৬৭) মারা গেছেন। জীবনের প্রায় অর্ধশত বছর তিনি ব্যয় করেছেন কবর খননের কাজে, বিনিময়ে কখনো কিছু চাননি। আশপাশের গ্রাম ও জেলাজুড়েও পরিচিত ছিলেন ‘শেষ ঠিকানার কারিগর’ নামে।

মনু মিয়ার মৃত্যুর খবরে আহত হয়েছেন অভিনেতা খায়রল বাসার। কারণ, মনু মিয়ার ঘোরা মারা যাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। মাসখানেক ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। এই সময়টা তার পাশে ছিলেন খায়রুল বাসার। হাসপাতালে গিয়ে মনু মিয়ার সঙ্গে দেখাও করেছেন তিনি।

আজ শনিবার নিজের ফেসবুকে মনু মিয়ার সঙ্গে দুটি ছবি প্রকাশ করেছেন খায়রুল বাসার। লিখেছেন, ‘মনু কাকা শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। এতদিন তিনি ঢাকায় ছিলেন। ৩ দিন আগে উনি বাড়ি ফিরেছেন। বলছিলেন, আগের চেয়ে বেশ সুস্থ আছেন। ওনার সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার ইচ্ছা আল্লাহ কবুল করেছেন। সুস্থ থেকেই উনি আল্লাহ ডাকে ফিরতে চেয়েছিলেন, এই দোয়াও চাইতেন।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘উনার মহৎ কর্মের ফলস্বরূপ আল্লাহ নিশ্চয়ই উনাকে ওনার স্বপ্নের ঘোড়া উপহার দেবেন। আল্লাহ উনাকে জান্নাতবাসী করুন। সবাই মনু কাকার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ তায়ালা তাকে শান্তিতে রাখুন।’

কদিন আগে মনু মিয়া অসুস্থ হয়ে ঢাকায় এলে দুষ্কৃতিকারীরা তার ঘোড়াটি হত্যা করে। এরপরই আলোচনায় আসেন মনু মিয়া। সামাজিক মাধ্যমে রীতিমতো ভাইরাল হয় বিষয়টি। নজরে আসে খায়রুল বাসারেরও। তিনি মনু মিয়াকে ঘোড়া কিনে দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। মনু মিয়ার সঙ্গে দেখাও করেন অভিনেতা। কিন্তু মনু মিয়া ঘোড়ার পরিবর্তে দোয়া চান খায়রুল বাসারের কাছে।

হাসপাতালে মনু মিয়ার সঙ্গে দেখা করার পর সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে অভিনেতা লিখেন, ‘আজ এক নায়কের সাথেই দেখা হলো আমার। আমি নিজ চোখে এক নায়ককেই দেখে আসলাম, বুক মেলালাম এক নায়কের সাথে! আজন্ম এক নায়ক মনু মিয়া। এই নায়কের গল্প বলবো শিগগিরেই। এটুকু বলি, মনু মিয়া অসহায় না বরং অসহায়ের সহায় হয়ে ওঠার প্রচণ্ড শক্তি আছে তার। এই দিশাহীন সমাজে এক আদর্শের নাম মনু মিয়া। মনু চাচা দোয়া ছাড়া কিছু চান না আপনাদের কাছে। উনি আপনাদের জন্য দোয়া করেন আপনারা ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন।’

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*