
রাজধানীর উত্তরা মাইলস্টোন কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় স্কুলের শিক্ষিকা মেহেরীন চৌধুরীর দৃঢ় উপস্থিতি ও দ্রুত সিদ্ধান্তে প্রায় নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী। যদিও শিক্ষার্থীদের উদ্ধারের পর নিজেই ঠিকঠাক বের হতে পারেননি; পুরে গেছে তার শরীরের একটি অংশ। ৪৬ বছর বয়সী মেহেরীন এখন জাতীয় বার্ন ইউনিটের চিকিৎসাধীন। সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজন নিহত ও অন্তত ২৬ জন দগ্ধ হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, দুর্ঘটনার মুহূর্তে দ্রুত শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুম থেকে বের করে আনেন সেই শিক্ষিকা। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু ছাত্র-ছাত্রীদের বের করে দিয়ে নিজেই যথাসময়ে বের হতে পারেননি। উদ্ধার অভিযানে থাকা এক সদস্যও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
শিক্ষিকা মেহেরীনকে (৪৬) উদ্ধার করা এমনই একজন মাইলস্টোন ছাত্রী মেহেরিন (১২)। তার বাবা সুমন নিশ্চিত করে বলেন, ম্যাডাম অনেক ভালো ছিল। সেনাবাহিনী আমাদের বলেছে, ‘শিক্ষিকার জন্য অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী বেঁচে গেছেন।’
উদ্ধার হওয়া চতুর্থ শ্রেণীপড়ুয়া ছোঁয়ার মামা জানান, খালি চুল পরে থাকতে দেখেছি। অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলাম। পরে জানতে পারি, এক ম্যাডাম ছোঁয়াকে উদ্ধার করে বাইরে বের করে দিয়েছে। বর্তমানে সে পিজি হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।
ছোঁয়ার মামার ভাষ্যমতে, খালি চুল পরে আছে ওইদিকে, দেখেই অজ্ঞান হয়ে গেছি। পরে দুজন আর্মি আমাকে টেনে নিয়ে ভিতর থেকে বাইরে নিয়েছে। পরে আবার এসে ২ ঘণ্টা খুঁজেছি, কিন্তু পাইনি। পরে এক ম্যাডাম নাকি ছোঁয়াকে, ও (ছোঁয়া) ইনজুরি হয়েছে; ওরে পিজি হাসপাতালে নিয়ে গেছে। পরে এক শিক্ষক ফোন করে বলে আপনার বাচ্চাকে আমরা এখানে নিয়ে আসছি। পরে ও (ছোঁয়া) বলতেছে, মামা আমি ক্যাডেট কলেজে ক্যামনে পড়মু।
আরও পড়ুনঃ ‘আমার ছেলেকে কি এনে দিতে পারবে?, কান্নায় ভেঙে পড়লেন দীপ্ত সাহার মা
প্রসঙ্গত, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় পাইলটসহ ১৮ জন নিহত হয়েছেন। এতে দগ্ধ আরও ১৬৪ জন হয়েছেন। এর আগে, দুপুর একটার পর বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। দগ্ধদের মধ্যে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি ৩৬ জনের পরিচয় মিলেছে।
Leave a Reply