মিডফোর্টের ঘটনায় ব্যবস্থা নিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যার ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

আজ শনিবার (১২ জুলাই) সকালে ঢাকা জেলা পুলিশ লাইন ও রিজার্ভ ফোর্স কার্যালয় পরিদর্শনকালে তিনি এ কথা বলেন তিনি। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বিচার প্রক্রিয়া ধীরগতির দায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর না। তবে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করছে না।

ইতোমধ্যে চাঁদপুরের ঘটনায়ও গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। আইন নিজের হাতে তুলে না নেয়ার আহ্বানও জানান তিনি।

এসকে/এইচএ

সম্পর্কিত:

এলাকা ভিত্তিক তালিকা করে অপরাধীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে: আইজিপি

গোয়েন্দা সংস্থা এলাকা ভিত্তিক তালিকা করে অপরাধীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়ার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম।শনিবার (১২ জুলাই) পুরান ঢাকার মিল ব্যারাকে অবস্থিত ঢাকা জেলা পুলিশ লাইন, রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্স (আরআরএফ) ও ট্রাফিক এন্ড ড্রাইভিং স্কুল (টিডিএস) পরিদর্শন শেষে এসব কথা জানান তিনি।আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা এলাকা ভিত্তিক তালিকা দেখে অপরাধীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়ার চেষ্টা করছে। এতে আপনারা বলতে পারেন যে আমরা সফল হয়নি কিন্তু আমরা চেষ্টা করছি অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার জন্য। ঘটনা যে বিস্তৃত দেখা যাচ্ছে সেখানে আমরা ৫০ শতাংশ কাজ করতে পারছি।আপনারা কোথায় চ্যালেঞ্জ দেখছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ধরনের ট্রমাটিক অভিজ্ঞতার পরে আমাদের ফোর্সটা গুছিয়ে তাদের কার্যকর করা… এখানে আমি সন্তুষ্ট না।  এক্ষেত্রে রাজনৈতিক বড় দলগুলোর সহযোগিতা চাইবেন কিনা, কেননা এধরনের ঘটনায় তাদের দলের নামগুলো আসছে এমন প্রশ্নের জবাবে আইজিপি  বলেন, অবশ্যই আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা চাইবো। সব দলের সহযোগিতা চাই।  আইজিপি আরও বলেন, আমরা যেহেতু নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। সেজন্য আমরা তাদের সর্বক্ষেত্রে সহযোগিতা করবো কারণ একটা গণতান্ত্রিক ও নির্বাচিত সরকার যাতে আসতে পারে। আর এটা করতে গেলে সব দলের সহযোগিতা লাগবে। আমরা মূলত তাদের কজটাই করছি। এমআর-২

অপরাধী কোন দলের নেতা, সেটা বিবেচ্য নয়: র‍্যাব মহাপরিচালক

অপরাধী কোন দলের কোন মাপের নেতা, সেটা আমাদের কাছে বিবেচ্য বিষয় নয় উল্লেখ করে র‍্যাব মহাপরিচালক একেএম শহিদুর রহমান বলেছেন, আমাদের কাছে অপরাধীর পরিচয় শুধু অপরাধী।আজ শনিবার (১২ জুলাই) দুপুরে কাওরানবাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক।র‍্যাবপ্রধান বলেন, আমাদের কাছে অপরাধী যে দলেরই হোক, প্রভাবশালীই হোক, কোনো ছাড় নেই। আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব। এ কে এম শহিদুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের মধ্যে দুজনকে র‍্যাব ও তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।মব ভায়োলেন্সে জড়িত না হতে দেশবাসীকে অনুরোধ জানিয়ে র‍্যাব মহাপরিচালক। তিনি বলেন, মিটফোর্ডের ঘটনাটির ছায়া তদন্তের মাধ্যমে ডিএমপিকে সহায়তা করছে র‍্যাব। জড়িত সবাইকে দ্রুতই আইনের আওতায় আনা যাবে। ছিনতাই চাঁদাবাজির মতো অপরাধ নিয়ন্ত্রণে র‍্যাব মাঠে আছে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।তিনি আরও জানান, ৫ আগস্টের পর থেকে টহল, গোয়েন্দা নজরদারি ও অভিযান বাড়ানোর ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত হয়েছে। আসন্ন নির্বাচনেও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে র‍্যাব কাজ করছে।উল্লেখ্য, রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে গত ৯ জুলাই এক ব্যবসায়ীকে পাথর দিয়ে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় বৃহস্পতিবার নিহতের বোন ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১০-১৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করে।এসকে/এইচএ

‘নির্বাচনের আগে যে কোনো মূল্যে পরিস্থিতির উন্নতি করবে সরকার’

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেছেন, পুলিশকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটবে। নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতির বিকল্প নেই। নির্বাচনের আগে যেকোনো মূল্যে পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটানো হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।শনিবার (১২ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সভাকক্ষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং-এর সাথে সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও সুধীজনের মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন।আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে সরকার পরিবর্তিত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে। যেসব ঘটনা ঘটছে, সেগুলোতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। ঢাকার হত্যার ঘটনায় পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে এবং এ ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে কাজ করছে। কয়েকদিন আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে প্রধান উপদেষ্টা বৈঠক করেছেন। সেখানে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, এখন থেকে কাউকে ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই।তিনি বলেন, নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহকালে বিগত সময়ে সাংবাদিকরা, যে ধরনের সমস্যায় পড়তেন, এবার সেই সমস্যায় আর পড়তে হবে না।উপ-প্রেস সচিব জানান, বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে যত মামলা ছিল, সেগুলো বাতিল করা হয়েছে। সাইবার নিরাপত্তা আইনে, হ্যাকিং ছাড়া সবগুলো ধারা জামিনযোগ্য করা হয়েছে।এ সভায় প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ এবং প্রধান উপদেষ্টার সহকারী প্রেস সচিব সুচিস্মিতা, জেলা প্রশাসক আফিয়া আক্তার উপস্থিত ছিলেন।উপদেষ্টার প্রেস উইং কর্মকর্তারা বলেন, সরকারের নিজস্ব কোনো দল নেই৷ কোনো রাজনৈতিক দলের ওপর রাগ ক্ষোভ নেই। অনিয়ম ঘটলে প্রশাসনকে জানাবেন। প্রশাসন এবার নিরপেক্ষ অবস্থান নেবে ও ব্যবস্থা নেবে।এসকে/এইচএ

মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী হত্যার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে: আইন উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, মিটফোর্ডের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের বিচারের ব্যবস্থা দ্রুততম সময়ের মধ্যে করা হবে। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইন, ২০০২ এর ধারা ১০ এর অধীনে এ বিচার করা হবে।আজ শনিবার (১২ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তার ভেরিফায়েড পেজে এ কথা বলেন আইন উপদেষ্টা। পরবর্তীতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সেই পোস্টের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানান।ফেসবুকে ড. আসিফ নজরুল লেখেন, মিটফোর্ডের নারকীয় হত্যাকান্ডের দ্রুত বিচারে সরকার বদ্ধপরিকর। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৫ জনকে এরইমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।তিনি আরো লেখেন, এই পাশবিক হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হবে। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইন, ২০০২ এর ধারা ১০ এর অধীনে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচারের ব্যবস্থা করা হবে।এর আগে গত বুধবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের তিন নম্বর গেটের সামনে পাকা রাস্তার ওপর ব্যবসায়ী চাঁদ মিয়া ওরফে সোহাগকে পাথর দিয়ে আঘাত করে ও কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বড় বোন বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।এসকে/এইচএ

মিটফোর্ডে হত্যাকাণ্ড নিয়ে রাষ্ট্রদূত মুশফিকের প্রতিক্রিয়া

রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ চাঁদ মিয়া ওরফে সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী।শুক্রবার (১১ জুলাই) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক পোস্টে তিনি তার অবস্থান স্পষ্ট করেন।ফেসবুক পোস্টে রাষ্ট্রদূত আনসারী লেখেন, জুলাইয়ের মহাকাব্যে শহীদ আবু সাঈদের প্রসারিত দুই হাত ছিল যেনো উত্তাল সাগরের ঢেউ—আছড়ে পড়েছিল হাসিনা-শাহীর হেরেমের শ্বাসরুদ্ধ দেয়ালে। হাজার বুলেটের মুখেও অটল, দৃঢ় পর্বতের মতো দাঁড়িয়ে ছিলেন শহীদ ওয়াসিম—মুক্তির সেই অনলস প্রতীক। তার রক্তেই শুদ্ধ হয়ে আমরা পেরিয়ে এসেছি দেড় যুগের নিকষ অন্ধকার।তিনি আরও বলেন, পুলিশের গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে যাওয়া ছাত্রদল নেতা জনির বুকের পাশে তার প্রিয়তমার কাঁদতে কাঁদতে উচ্চারিত প্রশ্ন আজো কানে বাজে—‘একটা মানুষের বুকে আপনাদের কয়টা গুলি চালানো দরকার হয়েছিল?’জনি, ওয়াসিম, মুগ্ধ, আবু সাঈদ, ফাইয়াজ—তারা যেনো গ্রিক পুরাণের ইকারুস; জানত, উড়লেই পুড়তে হবে—তবু উড়েছিল… আমাদের জন্য, মুক্তির নেশায়। স্বৈরাচার পতনের পরবর্তী এই বাংলাদেশে মিটফোর্ডের সামনে সোহাগের থেঁতলে যাওয়া মস্তিষ্ক— ভাবতেই শিহরিত হই, কল্পনাতেও যা অসম্ভব। প্রার্থনা সোহাগের জন্য— শোক ও বেদনায়।এসকে/এইচএ

কিছু ক্ষেত্রে ঐকমত্যে না পৌঁছালেও যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক কমাবে বলে আশা সরকারের

বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক নিয়ে দেশটির সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় তিন দিনব্যাপী আলোচনা শেষ হয়েছে। শুক্রবার ওয়াশিংটন ডিসির সময় সকাল ৯টায় শুরু হয় তৃতীয় দিনের আলোচনা। নানা বিষয়ে দরকষাকষির মধ্য দিনব্যাপী বৈঠকেরর মধ্য দিয়ে এ দফার আলোচনা শেষ হয়। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বৈঠকে শুল্ক কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত এসেছে কিনা, তা সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানা যায়নি। তবে বৈঠক শেষে সরকারের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, যেসব ইস্যুতে মতপার্থক্য ছিলো তিনদিনের মিটিংয়ে সেসবের অধিকাংশ ক্ষেত্রে উভয়পক্ষ ঐক্যমত্যে পৌঁছেছে। আর এতে দুই পক্ষই কিছু ছাড় দিয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে অন্য কোনো দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিলে বাংলাদেশকেও তা অনুসরণ করতে হবে এমন কিছু আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সাংঘর্ষিক শর্তে একমত হতে পারেনি ঢাকা।তারপরও ওই কর্মকর্তা সার্বিকভাবে দরকষাকষি সফলভাবে সমাপ্তি হয়েছে মনে করছেন। তিন দিনের আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে থেকে আরোপিত পাল্টা শুল্ক কমানোর বিষয়ে আশ্বাসও পাওয়া গেছে। এই বৈঠকের সুপারিশের ভিত্তিতে ট্রাম্প প্রশাসন চূড়ান্ত পাল্টা শুল্ক নির্ধারণ করবে।ওই কর্মকর্তা আরও জানান, যেসব বিষয়ে ঐক্যমত্যে পোঁছানো সম্ভব হয়নি পরতর্তীতে সেগুলো নিয়ে তৃতীয় দফায় ভার্চুয়ালি বা শ্বসরিরে উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে। কী উপায়ে ওই আলোচনা হবে তা পরবর্তীতে ঠিক হবে।দ্বিতীয় দফার আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। সরাসরি আরও উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান ও অতিরিক্ত সচিব নাজনীন কাওসার চৌধুরী। ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা।এদিকে দ্বিতীয় দিনের আলোচনার বিষয়ে শুক্রবার সকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, শুল্ক আলোচনায় দুই দেশের মধ্যে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বাণিজ্যের গতি-প্রকৃতি কেমন হবে, সেসব বিষয় উপস্থাপন ও যুক্তিতর্ক হয়েছে। বেশ কিছু বিষয়ে দুই দেশ মোটামুটিভাবে একমত হয়েছে। কিছু বিষয় অমীমাংসিত রয়ে গেছে। দ্বিতীয় দিনের আলোচনার একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন একান্তে ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেনটেটিভ অ্যাকম্বাসাডর জেমিসন গ্রিয়ারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। গ্রিয়ার ট্রাম্প প্রশাসনে মন্ত্রী পদমর্যাদার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যেক্তি। তার সঙ্গে শুল্কবিষয়ক আলোচনার পাশাপাশি দুই দেশের বাণিজ্য ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আন্তরিক পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় বাণিজ্য উপদেষ্টা বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন।বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির পাশাপাশি সে দেশ থেকে আমদানি বাড়াতেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটি এর মধ্যে শুরু হয়েছে। শুল্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ন্যায্যতা প্রত্যাশা করে। পরিবেশ যেন বাংলাদেশের জন্য প্রতিযোগিতামূলক থাকে। গ্রিয়ার সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।শুক্রবার যোগাযোগ করা হলে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে গণমাধ্যমকে জানানো হবে।বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। এর অন্যতম কারণ এ দেশে তৈরি বেশিরভাগ পণ্যে চীনা কাঁচামাল ব্যবহার করা হয়। তাই তিন দিনের আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র-চীনের শুল্কযুদ্ধের অংশ হিসেবে মার্কিন কর্মকর্তারা বাংলাদেশকে শিল্পের কাঁচামাল সংগ্রহের জন্য চীনের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন। অন্যদিকে, বাংলাদেশ এখনও স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) সদস্য হওয়ায় পাল্টা শুল্ক ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে।যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে স্থানীয় শিল্প খাতে চীনা মালিকানার বৃদ্ধি এবং নীতিনির্ধারণ, মেধাস্বত্ব আইন ও শ্রম অধিকারের দুর্বলতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র কঠোর ‘রুলস অব অরিজিনের (আরওও)’ প্রস্তাব করছে। এতে মার্কিন বাজারে প্রবেশের জন্য বাংলাদেশি পণ্যে ৪০ শতাংশ স্থানীয় মূল্য সংযোজন প্রয়োজন হবে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের শর্ত হচ্ছে, দেশটি অন্য কোনো দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা বা বাড়তি শুল্ক আরোপ করলে বাংলাদেশকেও তা অনুসরণ করতে হবে। অন্যান্য কঠিন শর্তের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এমন সাংঘর্ষিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনায় মতপার্থক্য দেখা দেয়।যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্টা শুল্ক নিয়ে আলোচনা চলমান থাকা অবস্থায় বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। পণ্য রপ্তানির বড় এই বাজারে শুল্কের বিষয়ে আলোচনায় ব্যবসায়ীদের সম্পৃক্ত করা হয়নি। এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। ১ আগস্ট থেকে এই বাড়তি শুল্ক আরোপ হলে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প, বন্দর ও রাজস্ব আদায় কার্যক্রম অধিকতর গতিশীল রাখার লক্ষ্যে গঠিত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে এই উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতারা। ওয়াশিংটনে চলমান আলোচনায় আশাব্যঞ্জক ফলাফল না এলে, পরবর্তী দরকষাকষিতে আরও দুয়েকজন অভিজ্ঞ উপদেষ্টাকে অংশ নিতে অনুরোধ করেন তারা। প্রয়োজনে লবিস্ট নিয়োগের পরামর্শও দেন ব্যবসায়ী নেতারা। একই সঙ্গে তারা অনুরোধ করেন  যে, বাংলাদেশের ওপর আরোপিত শুল্ক হার যেন কোনোমতেই প্রতিদ্বন্দ্বী ভিয়েতনাম, ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে বেশি না হয়। রাজধানীর রেল ভবনের সম্মেলন কক্ষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সভা অনুষ্ঠিত হয়।এবি

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*