
মালয়েশিয়া প্রবাসী নুর মুহাম্মদ জীবনের নতুন অধ্যায়—বিয়ে—উদযাপন করতে ১৫ আগস্ট পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার পাহাড়ি জেলা বুনেরে নিজ বাড়িতে ফিরেছিলেন। কিন্তু আনন্দঘন মুহূর্ত বদলে গেল ভয়াবহ বন্যার ট্র্যাজেডিতে। পরিবারের মোট ২৮ জনের মধ্যে ২৪ জনই বন্যায় প্রাণ হারান—আর সেই ২৪ জনের জানাজায় স্বজনহারা হয়ে দাঁড়াতে হলো নুরকে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, অতি বর্ষণে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় বুনেরের বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে যায়। নুরের পরিবারের বৃহৎ ৩৬ কক্ষের পৈতৃক বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে নুর বলেন, “সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। বাড়ি ফিরে শুধু ধ্বংসস্তূপ দেখেছি।”
নিহতদের মধ্যে নুরের মা, এক ভাই, এক বোন, দাদা, চাচা ও একাধিক শিশু রয়েছে। সৌভাগ্যক্রমে ইসলামাবাদ বিমানবন্দরের পথে থাকায় নুরের বাবা ও আরেক ভাই প্রাণে বেঁচে যান। বন্যায় শুধু তাঁর পরিবার নয়—চাচাদের পরিবার ও বিয়েতে আসা অতিথিদেরও মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যায়।
বুনের জেলা সাম্প্রতিক বর্ষণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের একটি। রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে প্রায় তিন ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত এ এলাকায় শুধু ১৫ আগস্টেই ৪০০-র বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর মিলেছে বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি। দেশজুড়ে জুনের শেষ দিকে শুরু হওয়া বর্ষাকালে এখন পর্যন্ত ৭৭৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে; আটকে পড়া অন্তত ২৫ হাজার মানুষকে উদ্ধারে সেনা ও বিমানবাহিনীর তৎপরতা চলছে।
স্বজনহানির বেদনায় বিপর্যস্ত নুর মুহাম্মদের সেই বিয়ের ঘর আজ পরিণত হয়েছে শোকের মিছিলে—যেখানে আশীর্বাদের বদলে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে কান্না আর প্রার্থনা।
Leave a Reply