বাংলাদেশ ইস্যুতে উত্তাল দিল্লি! কেন তুফান উঠলো ভারতের সংসদে?

ভারতের লোকসভায় হঠাৎ উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে একটি বিতর্কিত মানচিত্র ঘিরে, যেখানে বাংলাদেশের সীমানা হিসেবে দেখানো হয়েছে ভারতের কয়েকটি রাজ্য—বিহার, ঝাড়খণ্ড, উড়িষ্যা, আসাম—এমনকি মায়ানমারের আরাকান অঞ্চল পর্যন্ত। ‘গ্রেটার বাংলাদেশ’ নামে প্রচারিত এই মানচিত্র সংসদে তুলে ধরলে তা নিয়ে শুরু হয় তীব্র রাজনৈতিক ঝড়। সরকার ও বিরোধী দল একে অপরকে দোষারোপ করতে থাকে, আর চোখ রাঙাতে থাকে বিদেশি ষড়যন্ত্রের দিকে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শংকরের দাবি, এই মানচিত্রের পেছনে রয়েছে তুরস্কভিত্তিক ইসলামপন্থী সংগঠন ‘সালতানাত ই বাংলা’, যারা একটি আঙ্কারাভিত্তিক এনজিওর ছত্রছায়ায় বাংলাদেশ ও ভারতের অভ্যন্তরে ইসলামপন্থী চিন্তাধারা উসকে দিতে চাইছে। তাঁর মতে, এটি শুধু সীমান্ত ইস্যু নয় বরং ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও বিদেশি প্রভাবের সংকট।

জয়শংকর দাবি করেন, মানচিত্রটি সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি প্রদর্শনীতে দেখানো হয়। যদিও বাংলাদেশের তরফে তা প্রত্যাখ্যান করে বলা হয়েছে, এটি মধ্যযুগের ঐতিহাসিক মানচিত্র মাত্র, যার সঙ্গে আধুনিক রাজনৈতিক সীমা বা কোনো বিদেশি সংস্থার সম্পর্ক নেই।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পরিষ্কার জানানো হয়, ‘সালতানাত ই বাংলা’ নামে কোনো সংগঠন দেশটিতে নেই। বরং দিল্লির সন্দেহভাজন মানসিকতা কিংবা আন্তর্জাতিক বিভ্রান্তিকর প্রচারণা থেকেই এই বিতর্ক ছড়ানো হয়েছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ বিতর্ক ভারতের হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক কৌশলেরই অংশ, যেখানে নতুন ‘শত্রু’ তৈরি করে জনগণের দৃষ্টি ঘোরানোর চেষ্টা চলছে। চীন ও পাকিস্তানের জায়গায় এবার লক্ষ্যবস্তু বাংলাদেশ। আর তুরস্ককে উপস্থাপন করা হচ্ছে নতুন মুসলিম জিওপলিটিকাল শক্তি হিসেবে।

এতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক যে নতুন করে চাপে পড়বে, তা বলাই বাহুল্য। একটি কল্পিত মানচিত্র এবার দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক বাস্তবতায় ঢেউ তুলেছে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*