
যুক্তরাষ্ট্র নতুন বাণিজ্য নীতির আওতায় ভারতের তুলনায় পাকিস্তান ও বাংলাদেশসহ ৫০টিরও বেশি দেশের ওপর কম শুল্ক আরোপ করেছে। এই পরিবর্তন ভারতের রপ্তানি খাতে বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়াতে পারে, বিশেষ করে ইলেকট্রনিকস ও শ্রমনির্ভর খাতে। আগামী ৭ আগস্ট থেকে নতুন শুল্ক হার কার্যকর হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU), জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে চুক্তির পর এবার ভারতের ওপর চাপ বাড়াতে এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন। এদিকে বাংলাদেশের ওপর শুল্ক হার নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ শতাংশ, যেখানে ভারতের ওপর শুল্ক ২৫ শতাংশ। পাকিস্তান, যার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাণিজ্য চুক্তি রয়েছে, সেখানে শুল্ক হার মাত্র ১৯ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
এই শুল্ক ছাড় পাকিস্তান ও বাংলাদেশের গার্মেন্টস (RMG) খাতকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে দেবে। অন্যদিকে, ভিয়েতনাম (২০%), মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইন (১৯%) — এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোও পেয়েছে কম শুল্ক সুবিধা, যা ভারতের ইলেকট্রনিকস ও নন-লেদার ফুটওয়্যার রপ্তানিকে প্রভাবিত করতে পারে।
হোয়াইট হাউসের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কেভিন হ্যাসেট জানিয়েছেন, “ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনায় অগ্রগতি না থাকায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হতাশ। তাই ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে পরিস্থিতির সমাধান করতে চাইছেন।”
ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য বিরোধবর্তমানে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনা আটকে আছে কৃষি ও গাড়ি শিল্পকে কেন্দ্র করে। যুক্তরাষ্ট্র চাচ্ছে, ভারত যেন জেনেটিক্যালি মডিফায়েড (GM) পণ্য যেমন সয়াবিন, ভুট্টা আমদানিতে রাজি হয়, যা ভারত এখনও মানছে না। ভারতীয় কৃষকরা ছোট খামারে উৎপাদন করে, যেখানে GM পণ্যের ঝুঁকি নিয়ে ব্যাপক আশঙ্কা রয়েছে।
ভারতের খাদ্য সুরক্ষা আইন (Food Safety and Standards Act, 2006) অনুসারে, GM পণ্য নিয়ে এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ কাঠামো তৈরি হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ভারতের অনুমোদন প্রক্রিয়া ধীর, অস্বচ্ছ এবং রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত হয়।
কী চায় ভারত?ভারত চায় যুক্তরাষ্ট্রে টেক্সটাইল, লেদার ও ফুটওয়্যার খাতে আরও বাজার প্রবেশাধিকার। তবে বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র চায় ভারতের কৃষি ও দুগ্ধ খাতে প্রবেশাধিকার—যা এখনো বড় প্রতিবন্ধকতা।
Leave a Reply