পাইলট তৌকিরের মা যে কারণে ছেলের শিক্ষকের সাথে তিন বছর কথা বলেননি

উত্তরায় সামরিক বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগরের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন তার স্কুল শিক্ষক মো: হাবিবুর রহমান। শোক প্রকাশের পাশাপাশি তিনি তুলে ধরেন এক হৃদয়বিদারক স্মৃতি, যা আজও তাকে আবেগাক্রান্ত করে তোলে।

তিনি বলেন, “তৌকির আমার সরাসরি ছাত্র ছিল। আমি তার ক্লাস নিয়েছি। খুবই নম্র, ভদ্র ও প্রতিভাবান এক ছেলে ছিল সে। এক বছর কোচিং করার পর সে পাবনা ক্যাডেট কলেজে চান্স পায়। এরপরই তার মা আমার সঙ্গে তিন বছর ধরে কথা বলেননি।”

কেন এমন করলেন তৌকিরের মা? জানতে চাওয়ায় শিক্ষক বলেন, “একদিন আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম-আপা, আপনি আমার সঙ্গে কথা বলেন না কেন? তিনি উত্তর দিলেন, ‘আপনার পড়ানোর কারণেই আমার বুকের ধনটা পাবনায় থেকে পড়ে। এই কষ্ট আমি মেনে নিতে পারিনি।’ এই কথা শুনে আমি স্তব্ধ হয়ে যাই।”

বিমর্ষ কণ্ঠে শিক্ষক আরও বলেন, “একজন শিক্ষকের কাঁধে যেন আর কখনও তার ছাত্রের লাশ না ওঠে। আমি আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করি-হে আল্লাহ, আর কোনো শিক্ষকের কাঁধে তুমি লাশ দিও না। এই বোঝা অনেক ভারী, এটা আর বহন করতে পারছি না।”

সামরিক প্রশিক্ষণের সময় দুর্ঘটনায় নিহত তরুণ পাইলট তৌকির ইসলাম সাগরের মৃত্যুতে পুরো দেশ শোকে স্তব্ধ। তার আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিভিন্ন স্থানে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের জীবন রক্ষায় আরও কার্যকর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে দেশব্যাপী।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*