মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যার নতুন মোড়, বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য!

ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতাল এলাকায় গত ৯ জুলাই ব্যবসায়ী সোহাগকে প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনা নতুন মোড় নিচ্ছে। অনেক সামরিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক দাবি করছেন, এই হত্যাকাণ্ড ছিল পূর্বপরিকল্পিত। তাদের মতে, বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে ফাঁসাতেই এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন, গোয়েন্দা সংস্থার মদদে মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ডে বিএনপিকে পরিকল্পিতভাবে জড়ানো হয়েছে। এই ঘটনার পরপরই দেশজুড়ে বিএনপির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় তোলা হয়। অথচ, প্রায় একই সময়ে যুবদলের সাবেক এক নেতাকে গুলি করে ও রগ কেটে হত্যা করা হলেও সে বিষয়ে সবাই নীরব ছিল, যা পরিস্থিতিকে আরও রহস্যময় করে তুলেছে।

অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুস্তাফিজুর রহমান ফেসবুক লাইভে এসে মিটফোর্ডের ঘটনায় সরাসরি ডিজিএফআইকে দায়ী করেছেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ডিজিএফআই এবং এনএসআই কি চাইলেই মিটফোর্ডের রহস্য উদঘাটন করতে পারে না? তার অভিযোগ, অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য ভারতীয় পরামর্শে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এসব কাজ করছে।

তিনি আরও বলেন, “পাথর মেরে একজনকে হত্যা করা হলো, আর একজন ব্যক্তি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পুরো ঘটনার ভিডিও করল। যে পজিশন থেকে ভিডিওটি করা হয়েছে, পাথর মারার সময় যারা জড়িত ছিল তাদের এটা বোঝার কথা। কারণ ভিডিও করা ব্যক্তি তাদের দিক থেকেই এসে পাথর মারছিল। এটা স্পষ্টতই পরিকল্পিত।”

এই সাবেক সামরিক কর্মকর্তা মনে করেন, বিএনপিকে দুর্বল করতে পারলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে ভারত। তিনি তারেক জিয়ার আশেপাশে থাকা ব্যক্তিদের নিরাপত্তা যাচাই-বাছাই (সিকিউরিটি ভেরিফিকেশন) করার কথা বলেছেন, কারণ এর মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ফাঁস হচ্ছে কিনা তা জানা যেতে পারে।

প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন ফেসবুকে লিখেছেন, পরিকল্পিতভাবে দলীয় কোন্দলকে চাঁদাবাজি হিসেবে প্রচার করা হয়েছে। তার মতে, ডিজিএফআই রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে এবং জনমতকে নিয়ন্ত্রণ করতে এমন ঘটনা ঘটাতে জড়িত। তিনি অভিযোগ করেন, ডিজিএফআই ইচ্ছাকৃতভাবে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য যেভাবে ঘটনার সংবাদ তৈরি করেছে, তাদের প্রভাবিত মিডিয়াগুলো ঠিক সেভাবেই তা ছড়িয়ে দিচ্ছে। এ সময় তিনি গণমাধ্যম ও সামরিক বাহিনী থেকে ফ্যাসিবাদী দোসরদের এখনও না সরানোর তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন, এবং বলেন যে এরাই বিএনপির জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অন্যদিকে, আলোচিত অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও প্রবাসী লেখক পিনাকী ভট্টাচার্য তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “বিএনপির চাঁদাবাজ দুর্বৃত্ত অংশকে প্রশ্রয় দিয়ে মাঠে নামিয়েছে ডিজিএফআই। ডিজিএফআইয়ের লক্ষ্যই ছিল বিএনপির বেপরোয়া অংশকে দিয়ে এমন পরিস্থিতি তৈরি করা যেন বিএনপি ঘৃণিত রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়, এবং এভাবেই বিএনপিকে একেবারে ধ্বংস করে দেওয়া যায়।”

তিনি বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন, “আপনারা কি ডিজিএফআইয়ের এই বৃহত্তর পরিকল্পনাটি (গ্রান্ড ডিজাইন) বুঝতে পারছেন? প্রশ্ন করুন, কে তাদের এত সাহস দিয়েছে এইভাবে খুন করা যায়? কে খুনের সময় ক্যামেরায় নিখুঁতভাবে ভিডিও করল? চাঁদা না পেয়ে খুন করা একরকম, কিন্তু বীভৎসভাবে খুনের এই দৃশ্য (স্পেক্টাকল) কার পরিকল্পনায়? অবাক লাগে না? যেন ক্যামেরাম্যান জানতো এই ঘটনা ঘটবেই।”

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*